সুরঞ্জিত নাগ :
মহালয়ায় চণ্ডীপাঠের মাধ্যমে যে দেবীকে আবাহন করা হয়েছিল মর্ত্য, তিনি এখন মাতৃরূপে আবির্ভূতা। দেবীপক্ষের শেষে ভক্তদের পূজা গ্রহণের জন্য প্রতিমার গায়ে চলছে শিল্পীর শেষ তুলির টান ও সাজসজ্জা। এক একটি টানে মৃন্ময়ী চিন্ময়ী রূপ যেন আরো গাঢ় জীবন্ত হয়ে উঠেছেন দেবী দুর্গা। আর মৃন্ময়ী দেবীকে চিন্ময়ী করতে ব্যস্ত সময় পার পারছেন প্রতিমা শিল্পীরা।
রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) রাতে ফেনী পৌর এলাকার সুলতানপুর শ্রী শ্রী রক্ষাকালী বাড়ির মন্দির প্রাঙ্গনে এমন দৃশ্যই দেখা যায়।
প্রতিমা শিল্পীর কারিগর কারিগর কানাই পাল জানান, মূর্তি গড়ার কাজে বেশ পরিশ্রম হলেও দিনরাত পরিতৃপ্তির ঘাম ঝরছে শিল্পীদের শরীর থেকে। সব কিছুর পরেও এত দিন ধরে তিলে তিলে তৈরি করা প্রতিমাগুলোর নিপুণ কারুকাজ নিঁখুতভাবে ঝালিয়ে নিচ্ছেন কারিগররা। ঢুঁ দিয়ে পরখ করে যাচ্ছেন, তাদের প্রতিমার চোখ কেমন আঁকা হলো, কোনো খুঁত রয়ে গেলো না তো। কী ধরণের শাড়ি পরানো হবে, মুকুট, সাজের ধরন কী হবে, তাও আরেকবার শিল্পীদের মনে করিয়ে দিয়ে যাচ্ছেন কেউ কেউ। অজেয় বাংলাকে তিনি জানান, বাবা-ঠাকুরদাদের তৈরি করা প্রতিমা তৈরির ব্যবসা আজও ধরে রেখেছেন পরম যতেœ। তিনি জানান এবারের পুজোয় ১৮টি প্রতিমা তৈরির অর্ডার নিয়েছেন। গত মাসখানেক ধরে ৭-৮জন কারিগর নিয়ে খুব সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত কাজ করতে হচ্ছে। তিনি জানান, প্রতিমা তৈরিতে কাঠ, খড়, বেত, সুতলি, রঙ, তারপিন এঁঢেল মাটি, বেলে মাটি এসব উপকরণ পুজাম-পের কমিটিরা সংগ্রহ করে দেয়। তারা শৈল্পিক মন ও কারুকার্য দিয়ে দুর্গা প্রতিমা ফুটিয়ে তুলেন। যে কেউ তো আর প্রতিমা বানাতে পারে না। এটি একটি শিল্পকর্ম। কিন্তু এই শিল্পকর্ম সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলে যে পরিশ্রম হয় সে তুলনায় পারিশ্রমিক পাওয়া যায় না।
অন্যদিকে পূজা সামনে রেখে ফেনীর বড়বাজারের মার্কেটগুলোতে জমজমাট কেনাকাটা। মায়ের জন্য শাড়ি, গয়না থেকে শুরু করে নিজেদের শাঁখা সিঁদুর সব কিছু ঘুরে ঘুরে কিনছেন দিদি বৌদিরা। এখানকার নির্মল সাহা ষ্টোরের কর্ণধার টিটু সাহা জানান, পূজা উপলক্ষে কেনাকাটার ধুম পড়েছে। বেচা-বিক্রিও বেশ ভালো। নানা ডিজাইনের শাঁখা, সিঁদুর, বাহারি টিপ, মায়ের শাড়ি গয়না বেশি বিক্রি হচ্ছে।
সুলতানপুর শ্রী শ্রী রক্ষাকালী বাড়ি কমিটির সাধারণ সম্পাদক রাখাল চন্দ্র দাস জানান, এবার দুর্গা প্রতিমার সাজ ও শাড়ি ৪০ হাজার টাকায় কেনা হয়েছে।
জেলা পুজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শুসেন চন্দ্র শীল বলেন, জেলার ছয়টি উপজেলায় ১৪২টি ম-পে পুজা হবে। ২৬ সেপ্টেম্বর ষষ্ঠীপুজার মধ্য দিয়ে শুরু হবে দুর্গাপুজার মূলপর্ব। আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর বিজয়া দশমীতে ফেনীর কালিপালে দশমী ঘাটে দুর্গা প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যে দিয়ে পাঁচ দিনব্যাপী শারদীয় দুর্গোৎসব সম্পন্ন হবে।
পুজাম-পের নিরাপত্তার বিষয়ে জানতে চাইলে ফেনীর পুলিশ সুপার এস এম জাহাঙ্গীর আলম সরকার জানান, সুন্দর-সুশৃঙ্খল ও আনন্দঘন পরিবেশে শারদীয় দুর্গোৎসব উদযাপন করতে ইতোমধ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। সব মন্দিরে তিন স্তরের নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিয়েছি। বিশেষ বাহিনীর টহলও বলবৎ থাকবে।
উল্লেখ্য; পঞ্জিকামতে এবার মা দুর্গার নৌকায় আগমণ এবং ঘোড়ায় গমণ।
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
- » বাংলাদেশ সম্মিলিত শিক্ষক সমাজ ফেনী জেলা আহবায়ক কমিটি গঠিত
- » ফেনী বন্ধুসভার বৃক্ষরোপণ ও বিতরণ
- » আমার দেশ সম্পাদকের রত্নগর্ভা মাতা অধ্যাপিকা মাহমুদা বেগমের মাগফিরাত কামনায় ফেনীতে দোয়া
- » গাজীপুরে সাংবাদিক তুহিন হত্যার প্রতিবাদে ফেনীতে সাংবাদিকদের মানববন্ধন
- » ফেনীতে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সাংবাদিকদের উপর হামলার গোপন পরিকল্পনা ফাঁস
- » জনতার অধিকার পার্টির চেয়ারম্যানের উপর হামলা, সংবাদ সম্মেলন
- » ফেনী পৌর বিএনপির সদস্য নবায়ন কর্মসূচি উদ্বোধন
- » ফেনীতে হেফাজতের দোয়া মাহফিলে আজিজুল হক ইসলামাবাদী- ‘আলেম সমাজ ঐক্যবদ্ধ থাকলে দেশে আর ফ্যাসিবাদ সৃষ্টি হবে না’
- » ফেনীতে হাফেজ তৈয়ব রহ. স্মরণে দোয়ার মাহফিল
- » ছাত্র জনতার ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে ফেনীতে বিএনপি’র বর্ণাঢ্য বিজয় মিছিল, সমাবেশ “গণহত্যার দ্রুত বিচার ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের দাবি”